আমলকী এক প্রকার ভেষজ ফল। সংস্কৃত ভাষায় একে বলে আমালিকা। ইউনানী ও আয়ূবেদি বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে আমলকী ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
দামে সস্তা অথচ পুষ্টিগুণে ভরা ছোট আকারের এ ফলটিতে রয়েছে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যাদের শরীরের গিটে গিটে ব্যথা তারা আমলকী খেলে উপকার পাবেন। রিউমেটয়েড আথ্রাইটিস ও ওস্টিওপোরোসিস রোগে আমলকীর রস কিছুটা কাজ করে। এছাড়া অগ্নাশয়(প্যানক্রিয়াসের) ক্ষত সারাতেও আমলকীর কার্যকারিতা লক্ষ্যণীয়। ইঁদুরের ওপর এ নিয়ে করা এক গবেষণায় এ ফল মিলেছে।
আমলকী গাছের পাতা, ফল, বাকল এর সবই ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত আমলকী খান তাদের রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকছে। এছাড়াও রক্তের চিনির মাত্রাও কমাতে সাহায্য করে।
স্বাদ আর পুষ্টিতে অনন্য:
প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকীতে রয়েছে ৪৪৫ মিলিগ্রাম এস্করবিক এসিড বা ভিটামিন থাকে। এছাড়াও রয়েছে নানাপ্রকার ভিটামিন ও খনিজ উপাদান।
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, আমলকীতে রয়েছে পেয়ারার চেয়ে ৩ গুণ, কাগজি লেবুর চেয়ে ১০ গুণ বেশি ভিটামিন সি। এছাড়াও একটি কমলার চেয়ে ১৫/২০ গুণ, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।
একজন মানুষের দৈনিক ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি দরকার। দিনে ২টি আমলকী খেলে এ পরিমাণ ভিটামিনের চাহিদা এমনিতেই পূরণ হয়ে যাবে।
আমলকীর এত গুণ!
* আমলকী খেলে মুখে রুচি বাড়ে।
* দন্তরোগ সারাতে কাঁচা আমলকীর জুড়ি নেই।
* পেটের পীড়া, সর্দি, কাশিতেও আমলকী জাদুর মতো কাজ করে।
* লিভার ও জন্ডিস রোগের বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে আমলকী ব্যবহার করা হয়।
* নিয়মিত আমলকী খেলে অল্প বয়সে চুলপাকা রোধ হয়।
* দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও আমলকীর জুড়ি নেই।
* বমি বন্ধেও আমলকী উপকারী।
* পুরোনো সর্দি-কাশি থেকে নিরাময়ে আমলকী বেশ কার্যকর।
* ত্বক, চুল ও চোখের জন্য আমলকী বেশ উপকারী।
* যাদের হজমশক্তি কম তারা আমলকী খেয়ে দেখতে পারেন।
* যাদের অ্যাজমা রয়েছে তারা আমলকী খেলে উপকার পাবেন। নিয়মিত আমলকী খেলে ফুসফুস ও হার্ট ভালো থাকে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। যা বিভিন্ন রোগ থেকে আরোগ্য ছাড়াও শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে করে তোলে আরো সক্রিয়। আর তাই আমাদের সহজলভ্য এ ফলটিকে অবহেলা করা উচিত নয়। বিদেশি ফল আপেল কমলার পাশপাশি নিয়মিত অল্প হলেও স্বদেশী মৌসুমী ফল খান। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মৌসুমী ফল খেতে উদ্বুদ্ধ করুন। এতে করে তারা হয়ে উঠবে আরো বুদ্ধিমান ও মেধাবী।